January 14, 2025, 10:06 am
স্টাফ রিপোর্টার : বরিশালের কীর্তনখোলা নদীতে বাল্কহেডের সঙ্গে সংঘর্ষে একটি যাত্রীবাহী স্পিডবোট ডুবে যাওয়ার ঘটনায় নিখোঁজ আরও তিনজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ রোববার সকালে তাঁদের লাশ উদ্ধার করেন নৌ পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা। এ নিয়ে ওই দুর্ঘটনায় চারজনের লাশ উদ্ধার হলো।
নৌ পুলিশ বলছে, আজ সকাল সাড়ে ৮টা থেকে সাড়ে ৯টার মধ্যে একে একে দুর্ঘটনাস্থল কীর্তনখোলা নদীর লাহারহাট খালের প্রবেশমুখে জনতার হাট–সংলগ্ন নদীতে তিনটি লাশ ভেসে ওঠে। পরে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা খবর পেয়ে লাশ তিনটি উদ্ধার করেন। এখনো এক যাত্রীর নিখোঁজ থাকার তথ্য আছে। সজল দাস (৩০) নামের ওই যাত্রী বরিশাল মেট্রোপলিটন বিমানবন্দর থানার রহমতপুর এলাকার দুলাল দাসের ছেলে। তিনি ভোলায় ব্র্যাকে চাকরি করতেন।
উদ্ধার হওয়া তিনটি লাশের মধ্যে একটি স্পিডবোটের চালক আল আমিনের (২৩) এবং অপর দুটি হলো যাত্রী মো. ইমরান হোসেন ওরফে ইমন (২৯) ও মো. রাসেল আমিনের (২৪) বলে স্বজনেরা শনাক্ত করেছেন। তাঁদের মধ্যে আল আমিন ভোলা সদরের ভেদুরিয়ার উত্তর চর এলাকার মো. সিদ্দিকুর রহমানের ছেলে। আর মো. ইমরান হোসেন ভোলা সদরের ধনিয়া এলাকার মো. শাহাব উদ্দিনের ছেলে ও রাসেল আমিন পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার নিওপাড়া এলাকার আজগর আলী হাওলাদারের ছেলে।
গত বৃহস্পতিবার বিকেলে ভোলার ভেদুরিয়া ঘাট থেকে ১০ যাত্রী নিয়ে স্পিডবোটটি বরিশালের ডিসি ঘাটের উদ্দেশে রওনা দেয়। এটি লাহারহাট খাল থেকে কীর্তনখোলা নদীতে প্রবেশের সময় দুর্ঘটনা ঘটে। এতে স্পিডবোটের এক যাত্রী মারা যান এবং এক পুলিশ সদস্য গুরুতর আহত হন।
এ ঘটনায় স্পিডবোটের চালক ও কয়েকজন যাত্রী নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানিয়েছিল নৌ পুলিশ। তবে নিখোঁজ ব্যক্তিদের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যাচ্ছিল না। নিখোঁজ ব্যক্তিদের উদ্ধারে নৌ পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিরা তিন দিন ধরে অভিযান চালাচ্ছিলেন। কিন্তু তাঁদের সন্ধান পাওয়া যাচ্ছিল না। আজ সকালে কীর্তনখোলা নদীতে একে একে তিনজনের লাশ ভাসমান অবস্থায় পাওয়া যায়।
দুর্ঘটনার পর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় প্রথমে জালিস মাহমুদ (৫০) নামের এক যাত্রীর লাশ উদ্ধার হয়েছিল। তিনি পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলার বাসিন্দা। জালিস মাহমুদ স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের ভোলার বিক্রয় প্রতিনিধি (এসআর) হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এ ঘটনায় গুরুতর আহত অবস্থায় পুলিশ সদস্য মানসুর আহমেদকে (৩০) উদ্ধার করে বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিনি ভোলার দৌলতখান থানার কনস্টেবল ও বরগুনা সদরের বাসিন্দা।
বরিশাল সদর নৌ পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সনাতন চন্দ্র সরকার বলেন, দুর্ঘটনাস্থলের কাছাকাছি স্থান থেকেই মরদেহ তিনটি উদ্ধার করা হয়েছে। এসব লাশ উদ্ধারের পর সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে পুলিশ। পরে তিনটি লাশ ময়নাতদন্তের জন্য বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়। এ নিয়ে চারজনের লাশ উদ্ধার হলো। এখনো এক যাত্রী নিখোঁজ রয়েছেন। তাঁকে উদ্ধারে নৌ পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা অভিযান অব্যাহত রেখেছেন।
Leave a Reply